ঢাকা | মঙ্গলবার | ২রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

মিয়ানমারে বিস্ফোরণে ঐতিহাসিক রেলসেতু উড়িয়ে দেওয়া হলো বিদ্রোহীদের হামলায়

বোমা হামলা চালিয়ে মিয়ানমারের এক ঐতিহাসিক রেলসেতু ধ্বংস করেছে দেশটির সামরিকবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। এই সেতুটি ঔপনিবেশিক যুগের অন্যতম ব্যতিক্রমী নির্মাণ এবং বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলপথের সেতু হিসেবে পরিচিত। সামরিক জান্তার দাবি, তারা এই সেতুটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস করেছে।

রোববার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, প্রচুর সংখ্যক অভ্যুত্থানবিরোধী গোষ্ঠী বোমা হামলা চালিয়ে এই ঐতিহাসিক সেতুটি ধ্বংস করেছে। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটার পর থেকে দেশটি গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র বিদ্রোহী দল ও গণতন্ত্রকামী প্রতিরোধ আন্দোলনের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।

জান্তা বাহিনীর একজন মুখপাত্র, জ্য মিন তুন, ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘‘তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) ও পিপলস ডিফেন্স ফোর্স এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে এবং ঐতিহাসিক গোকটেইক রেলসেতু ধ্বংস করেছে।’’

গোকটেইক রেলওয়ে সেতু মিয়ানমারের সবচেয়ে উঁচু অবকাঠামো, যা প্রায় ৩৩৪ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। এটি ১৯০১ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত হয় এবং তখন এটি বিশ্বের অন্যতম উঁচু রেলওয়ে ট্রেসেল বলা হতো। প্রকাশ্য ভিডিও ও ছবি থেকে দেখা যায়, দুর্ঘটনায় সেতুটি আংশিকভাবে ধসে পড়েছে ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অপরদিকে, টিএনএলএর মুখপাত্র, লওয়ে ইয়াই, অভিযোগ করেছেন, জান্তার বোমা হামলায় এই সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আজ সকালে মিয়ানমার সেনারা ড্রোন ব্যবহার করে আমাদের ঘাঁটিগুলিতে হামলার চেষ্টা করে। তারা আমাদের লক্ষ্য করে বোমা ফেলে, যার প্রভাব পড়েছে গোকটেইক সেতুতেও।’’

সম্প্রতি নাওংকিও ও কিয়াউকমি শহরগুলোতে দেশটির জান্তা বাহিনী ও টিএনএলের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছিল। যদিও জান্তা গত জুলাইয়ে এই শহরগুলো পুনর্দখলের দাবি করেছিল। এই পরিস্থিতি মিয়ানমারের চলমান অস্থিরতা ও সংঘর্ষের চিত্রটিকে আরও জটিল করে তোলে।

সূত্র: এএফপি