ঢাকা | সোমবার | ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের নতুন মামলার রায় আজ ঘোষণা হবে

২৬ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং টিউলিপ সিদ্দিকসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একই চাঞ্চল্যকর মামলার রায় আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঘোষণা করা হবে। এই মামলায় অভিযোগ রয়েছে যে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা সরকারি জমি বরাদ্দের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক রবিউল আলম বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন, যেখানে গত ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় দেওয়ার জন্য এ দিন ধার্য করা হয়। মামলার তদন্তে জানা যায়, গত ১৩ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন অভিযোগটি দায়ের করেন। এতে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিক, রিজওয়ানা সিদ্দিকসহ ১৫ জন আসামি করা হয়। পরে তদন্তে আরও দুজনকে যুক্ত করে মোট ১৭ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়া হয়।

অভিযুক্তরা মধ্যে অন্যরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন একজন কর্মকর্তা, সিনিয়র সহকারী সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ, সাবেক সদস্য, বিভিন্ন কর্মকর্তা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সচিব ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর নাম।

গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত এই মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। এ পর্যন্ত ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্পসহ বিভিন্ন দুর্নীতির তিনটি মামলায় শেখ হাসিনার সাত বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। তাকে ৩ লাখ টাকার জরিমানা করা হয় এবং জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এই রায় অনুযায়ী, যদি শেখ হাসিনা বা তার পরিবারের অন্য কেউ ব্রিটেনে থাকেন, তাহলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন। বিশেষ করে, তার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সদস্য ও সাবেক সিটি মন্ত্রী হিসেবে তার ১০ বছরের সাজা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি তার মা, ভাই ও বোনকে শেখ হাসিনার মাধ্যমে প্লট পাইয়ে দিয়েছেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবেক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ৪ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি অর্থের দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়। এ ঘটনায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলও রিপোর্ট করে, যেখানে বলা হয়, টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যপদ হারাতে পারেন।

প্রসঙ্গত, টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, তিনি তার বাবার কাছ থেকে ফ্ল্যাট দাবি করে থাকলেও, আসলে এটি একটি আওয়ামীপন্থি নেতার কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া। তবে ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, তাঁদের অভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রমাণ হয়েছে যে, তিনি এই বিষয়ে মিথ্যাচার করেননি।

বাংলাদেশে এ মামলার ব্যাপারে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে, বিশেষ করে ব্রিটিশ আইনজীবীরা বলছেন, এই মামলাটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ নয়। তারা বাংলাদেশ হাইকমিশনার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে, ডেইলি মেইল জানিয়েছে, টিউলিপ বা তার পক্ষের কেউ এই বিষয়ে মুখ খোলেননি।