ঢাকা | সোমবার | ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

গাজায় ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় নিহত ৬৫, যুদ্ধবিরতি অনির্দেশ্য

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এক দিনে আরও অন্তত ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই অবরুদ্ধ শহরটি মারাত্মক ধ্বংসের মুখে পড়েছে, যেখানে স্কুল, ঘরবাড়ি এবং শরণার্থী শিবির সবই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এর ফলে হাজারো মানুষ দক্ষিণাঞ্চলের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে, কিন্তু পালানোর পথে তারা নির্মম হামলার শিকার হচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞের কোনো লক্ষণ দর্শন করছে না। बुधवार ভোর থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত অন্তত ৬৫ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে হামাসের পক্ষ থেকে আশা জাগানো কোনো বার্তা নেই যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি মানবে।

বুধবার গাজার জায়তুন এলাকার আল-ফালাহ স্কুলে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এই স্কুলটি এখন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো, যেখানে শত শত বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। হামলার পরপরই ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও, আরও একটি হামলা তাদের আহত করে।

আহতদের মধ্যে মুন্তাসির আল-দাহশান নামে একজন সিভিল ডিফেন্স কর্মী পরে মারা যান। আল-আহলি আরব হাসপাতালে জানানো হয়েছে, এতে কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়।

একই দিনে দারাজ মহল্লায় একটি বাড়িতে হামলার ফলে সাতজনের মৃত্যু হয়। গাজার দক্ষিণ-পূর্বে অন্য এক হামলায় এক শিশুও মারা গেছে। এই সব ঘটনাসহ মোট ৬৫ জনের মধ্যে ৪৭ জনই গাজার মূল শহরটির বাসিন্দা।

গাজার সবচেয়ে বড় শহরটি এখন ইসরায়েলের অবিরাম বিমান মানব হামলার শিকার, যার ফলে নগরীর অবস্থা দিন দিন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। প্রতিদিন বহু মানুষ মারা যাচ্ছে, বাড়িগুলো ও স্কুলের ধ্বংসলীলা চলছে। মানুষ দ্রুত দক্ষিণের দিকে পালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু পিছু ছুঁড়ে হামলার শিকার হচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক সংস্থা রেড ক্রস জানিয়েছে, গাজায় তাদের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করতে হচ্ছে। কিছু দিন আগে ডক্টরস উইদআউট বার্ডার্সও (এমএসএফ) এই ঘোষণা দিয়েছিল। তবে রেড ক্রস বলছে, দির আল-বালাহ ও রাফাহর অফিস থেকে যতটা সম্ভব তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।

এছাড়াও, গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা আল-রাশিদ সড়কটি বন্ধ করে দিয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ পথ দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে যাতায়াত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এখন হাজারো মানুষ বাধ্য হয়ে এই রাস্তাটিকে ধরে পালাচ্ছে।

গাজার পশ্চিমে আল-শিফা হাসপাতালের প্রাঙ্গণে অজ্ঞাত ১১ জনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এই হাসপাতালটি এখন টানা হামলার মধ্যেও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যেখানে কিডনি রোগীদেরও জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন।