ঢাকা | সোমবার | ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দিলেই জনগণ প্রতিরোধে নামবে: ইসলামি আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, যদি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত না করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে সাধারণ জনগণ সম্মিলিতভাবে তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি এ কথা আজ (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বাড্ডা ইউলুপ সংলগ্ন এলাকার একটি গণসমাবেশে বলেন, যেখানে পাঁচ দফা দাবির পক্ষে হাজারো মানুষ যোগদান করে।

চরমোনাই পীর উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার পরও দেশের মৌলিক অধিকার, ন্যায্যতা ও মানবিক মর্যাদা পূর্ণতা লাভ করেনি। তাই তিনি দ্রুত সরকারের কাছে দাবি জানান, যেন নির্বাচন পরিচালনার জন্য আইনি ভিত্তি শক্তিশালী করে দেওয়া হয়। কারণ, সনদ ছাড়া নির্বাচন হলে সেটি বৈধতা পাবেনা এবং জনগণের আস্থা বিনষ্ট হবে।

তিনি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে গভীর সমালোচনা করে বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের সময় আমাদের তিনটি মূল শ্লোগান ছিল—সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ও ন্যায়বিচার। কিন্তু আজ ৫৩ বছর পরেও এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়নি। যারা দেশের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করছেন, তারা এসব মূল্যবোধের প্রতি উপযুক্ত গুরুত্ব দেয়নি বলে তিনি আক্ষেপ ব্যক্ত করেন।

চরমোনাই পীর বলেন, গত ২৪শে জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক চাপানউতোর সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে জনগণ বুঝতে পেরেছে যে নতুন শক্তি ক্ষমতায় এলে তারা আবারও সরকারকে নিজেদের স্বার্থের জন্য ব্যবহার করবে। এটা দেশের মানুষের জন্য ভালো নয়। সেই কারণেই তিনি আন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তন চান।

তিনি বলেন, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মূলনীতি হচ্ছে—সবার জন্য ন্যায়, মর্যাদা ও সমতার প্রতিষ্ঠা। মা, বোন, শ্রমজীবী, ব্যবসায়ী—প্রত্যেকের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সংগ্রাম করছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেহেতু এই নীতি-আদর্শ রেখেছেন, এই পরিবর্তন ছাড়া কোনো শান্তি বা মুক্তি আসবে না। আমাদের আন্দোলন কেবল রাজনৈতিক নয়, এটি নৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের এক মহান প্রচেষ্টা।

সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিক যেন তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়। যারা দেশের সম্পদ ও ক্ষমতা দখল করে রেখেছে, তারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। এই পরিস্থিতিতে পরিবর্তন আবশ্যক। তিনি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এই পরিবর্তন এনে দেশের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সমস্ত ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত।

সমাবেশে তিনি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নাগরিক অধিকার, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং নৈতিক নেতৃত্বের গুরুত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একযোগে জনগণের অধিকার রক্ষা ও দেশের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাবে এবং জনগণের স্বার্থে নেতৃত্ব দেবে।