ঢাকা | সোমবার | ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সুশাসন ও কার্যকর নীতি সংস্কার আদর্শের বিকল্প নয়, ড. দেবপ্রিয়

দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ ও পাবলিক পলিসি বিশ্লেষক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় সুশাসন, অর্থনীতি ও নীতিগত সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শুধুমাত্র এসব সংস্কার ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে উপযুক্ত নীতি প্রণয়ন করা অপরিহার্য, যা দেশের উন্নয়ন ক্ষেত্রের অগ্রগতি and টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) সফল বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।

আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউআরপি ডিসিপ্লিনের লেকচার থিয়েটারে ডিভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘Bangladesh in Transition: Governance, Economy and Policy Reforms’ শীর্ষক সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে তিনি এ কথা তুলে ধরেন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সংস্কার কার্যকর করতে প্রথমে আমাদের মানসিকভাবে দৃঢ়তা অর্জন করতে হবে, যেখানে স্পষ্টভাবে সমস্যার দিকগুলো চিহ্নিত করতে হবে। ধারণাগুলোকে বাস্তবায়নে পর্যায়ে নামানোর জন্য কাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি নীতিগত সমন্বয় জরুরি। এই সময় বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা করতে হবে এবং সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে নির্ধারণ করতে হবে। কিছু স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যা সুস্পষ্ট ও স্বচ্ছ হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, টেকসই সংস্কারের জন্য একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ, মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যম এবং সকল অংশীজনের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। বিনিয়োগের গতি বাড়াতে হবে এবং সংস্কার কার্যক্রমকে সর্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গিতে এগিয়ে নিতে হবে। এই প্রক্রিয়া একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়; এটি একটি মানসম্পন্ন এবং সামগ্রিক উদ্যোগ। এজন্য প্রয়োজন একটি শক্তিশালী ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ এবং সমাজের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম, যিনি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি আরও গতিশীল করার জন্য সুশাসন ও নীতিগত সংস্কারকে যুগোপযোগী করে তুলতে হবে। তিনি উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে যোগ্য মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার গুরুত্বের উপর জোর দেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী করে তুলতে এবং দেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে উঠিয়ে রাখতে সবসময় সচেষ্ট রয়েছে।

সেমিনারটি প্রধানত সভাপতিত্ব করেন ডিভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ড. কাজী হুমায়ুন কবীর। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাজবিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর শেখ শারাফাত হোসেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ জোবায়ের হোসাইন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সহকারী অধ্যাপক ফারহানা হক এবং প্রভাষক আইরিন আজহার ঊর্মি।

সেমিনারে মূল বক্তা ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন বিভাগের শিক্ষক ও বিভিন্ন বর্ষের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী।

এর আগের দিন সকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউל করিমের সঙ্গে তাঁর সৌজন্য সাক্ষাৎ ঘটে, যেখানে উপাচার্য ড. দেবপ্রিয়কে স্বাগত জানিয়ে মনোগ্রাম খচিত একটি ক্রেস্ট উপহার দেন।

উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান, দি অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ আশিক উর রহমান, ডিভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ড. কাজী হুমায়ুন কবীর এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান।